অফিসের ব্যস্ত শিডিউল থেকে সময় ম্যানেজ করে বেরোলাম আমরা চার জনে একটু নর্থ সিকিম ঘুরতে। আমাদের বেস পয়েন্ট ছিল গ্যাংটক। সেখান থেকে প্রথমে গেলাম লাচেন হয়ে গুরুডোংমার লেক। যাওয়ার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। শেষের কয়েক কিলোমিটার পাকা রাস্তা, তার আগে শুধুই পাথর, রাস্তা বলে কিছু নেই। শেষ কিছুটা রাস্তা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। তবে ওখানে পৌঁছে আসল জিনিসটা দেখা গেল। গুরুডোংমার লেকের সৌন্দর্য্য দেখে অনেকেরই প্রায় ভির্মি খাওয়ার জোগাড়। যদিও সেটা বোধহয় ওই উচ্চতায় (১৭৮০০ ফিট) অক্সিজেন আর হাওয়ার প্রেশার কম থাকায় হয়েছে।
জোকস অ্যাপার্ট, সত্যিই অসাধারণ সুন্দর এই লেকটি। এছাড়া শুনলাম এটা খুবই পবিত্র স্থান বৌদ্ধ এবং শিখদের কাছে। যাইহোক, গুরুডোংমার লেকের সৌন্দর্য্য নিয়ে লিখতে বসলে পাতার পর পাতা শেষ হয়ে যাবে। আমরা ওখানে মাত্র আধ ঘন্টা ছিলাম। সেখান থেকে পরের দিন গেলাম লাচুং, তারপর আমাদের গন্তব্য ছিল ইয়ুমথাং উপত্যকা এবং উষ্ণ প্রসবণ। ইয়ুমথাং উপত্যকা আসলে ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স’ নামে পরিচিত। কিন্তু সেপ্টেম্বরের শেষে গিয়ে সেরকম কিছুই দেখতে পেলাম না। খুবই ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে শুধু তিস্তার একটা শাখার সৌন্দর্য্য দেখলাম। সেখান থেকে একটু নেমে, উষ্ণ প্রসবণের জলে হাত গরম করে সত্যিই খুব আরাম পেলাম। কথিত আছে, ওই হলে স্নান করলে নাকি গায়ের ব্যাথা আর বাত সেরে যায়। সেই আশায় ওখানে অনেকেই কৃত্রিমভাবে তৈরি করা একটা চৌবাচ্চায় বসে থাকে।
এরপর আমাদের ট্যুর শেষ করে আবার গ্যাংটকে ফিরে আসা, ম্যালে একটু সময় কাটানো, সেখান থেকে নিউ জলপাইগুড়ি হয়ে বাড়ি ফিরে আসাটা আর বলতে ভাল লাগছে না। এত তাড়াতাড়ি ট্যুর শেষ করতে মন একেবারেই চাইছিল না। তবে আরেকবার যাওয়ার ইচ্ছে নিয়েই ফিরে এলাম কলকাতার বুকে। এখনো মাঝে মাঝে এই ভ্রমণের কথা আর গুরুডোংমার লেকের সৌন্দর্য্য মনে মনে হাতছানি দেয়।
উত্তর সিকিম থেকে কয়েকটা ছবি রইল। কেমন লাগল সবাই জানাবেন।
Latest posts by দেবলীনা বেরা (see all)
- উত্তর সিকিম ভ্রমণ - নভেম্বর 13, 2015